বদলে গেল নাম, বিনিয়োগকারীর হাত ধরে বাণিজ্যিকিকরণের পথে হাঁটল ইস্টবেঙ্গল
বৈঠকে দুপক্ষের মধ্যে চুক্তির শর্তাবলী ঠিক হয়। তবে সংস্থাটি ঠিক কতদিনের জন্য কত টাকা বিনিয়োগ করবে তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি ক্লাব কর্তারা। যদিও তাঁদের কথায়, এটা একটা ঐতিহাসিক দিন। ক্লাবের তরফে জানানো হয়েছে, ইউবি গ্রুপ স্পনশরশিপ ছেড়ে দেওয়ার পর ক্লাব চরম আর্থিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল। সেই সংকট কাটিয়ে ওঠার একটি উজ্জ্বল পথ মিলেছে।

সুখেন্দু সরকার
ম্যান ইউ, রিয়েল মাদ্রিদের কায়দায় বাণিজ্যিকিকরণের পথে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব। ইস্টবেঙ্গলের মালিকানা বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দিলেন ক্লাব কর্তারা। বৃহস্পতিবার এক বৈঠকের পর ঠিক হয়েছে, কোয়েস করপোরেশন লিমিটেড নামে একটি বাণিজ্যিক পরামর্শদাতা সংস্থার কাছে থাকবে ইস্টবেঙ্গলের ৭০ শতাংশ শেয়ার। যদিও ক্লাবকর্তাদের দাবি, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সমান অধিকার থাকবে দু'পক্ষেরই।
এদিনের চুক্তির পর ইস্টবেঙ্গলের নতুন নাম হল 'কোয়েস ইস্টবেঙ্গল ক্লাব'। চুক্তির আগে এদিন এক ম্যারাথন বৈঠকে বসেন ক্লাব কর্তা ও বেসরকারি বিনিয়োগকারী সংস্থার কর্তারা। বৈঠকে ইস্টবেঙ্গলের তরফে দেবব্রত সরকার ছাড়াও হাজির ছিলেন তাবড় কর্মকর্তা। বেসরকারি সংস্থাটির তরফে হাজির ছিলেন সংস্থার কর্ণধার অজিত আইজ্যাক-সহ আইনি বিশেষজ্ঞরা। এছাড়াও ছিলেন AIFF সচিব কুশল দাস, আইএফএ সচিব উত্পল গঙ্গোপাধ্যায় ও এআইএফএফ সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুব্রত দত্ত।
বৈঠকে দুপক্ষের মধ্যে চুক্তির শর্তাবলী ঠিক হয়। তবে সংস্থাটি ঠিক কতদিনের জন্য কত টাকা বিনিয়োগ করবে তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি ক্লাব কর্তারা। যদিও তাঁদের কথায়, এটা একটা ঐতিহাসিক দিন। ক্লাবের তরফে জানানো হয়েছে, ইউবি গ্রুপ স্পনশরশিপ ছেড়ে দেওয়ার পর ক্লাব চরম আর্থিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল। সেই সংকট কাটিয়ে ওঠার একটি উজ্জ্বল পথ মিলেছে।
চুক্তি অনুসারে তৈরি হয়েছে নতুন একটি কোম্পানি। কোম্পানির নাম কোয়েস ইস্টবেঙ্গল এফসি প্রাইভেট লিমিটেড। তার বোর্ড অফ ডিরেক্টরসে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব ও বেসরকারি সংস্থার ৪ জন করে প্রতিনিধি রয়েছেন। ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকারের দাবি, অধিকাংশ সত্ত্ব বেসরকারি সংস্থাটির হাতে থাকলেও ফুটবল ও ক্লাব পরিচালনা সংক্রান্ত সিদ্ধান্তে দুপক্ষেরই সমানাধিকার থাকবে। তবে সংস্থাটি কত টাকা বিনিয়োগ করবে তা জানাননি তিনি।
এবারই আইএসএল খেলবে ইস্টবেঙ্গল?
জানানো হয়েছে, চুক্তির পর ইস্টবেঙ্গলের জন্য স্পনসর খুঁজতে ঝাঁপাবে দু'পক্ষই। স্পনসরশিপের টাকা থেকে লভ্যাংশের ভাগ পাবে ক্লাব। তবে ইস্টবেঙ্গল আইএসএলে খেলবে কি না তা খোলসা করেনি কোনও পক্ষই। ইঙ্গিতপূর্ণভাবে জানানো হয়েছে, 'দেশের পয়লা নম্বর লিগে খেলবে ক্লাব'।
ক্লাবকর্তাদের দাবি, ভারতীয় ফুটবলে এই ধরণের চুক্তি এই প্রথম। ভারতীয় ফুটবলে স্পনসরশিপ এলেও এর আগে বাণিজ্যিকভাবে সরাসরি বিনিয়োগের করেনি কেউ। সেক্ষেত্রে ক্লাব পরিচালনা ও ফুটবল সংক্রান্ত সিদ্ধান্তে স্পনসরের তেমন কোনও অংশীদারিত্ব থাকত না। কিন্তু বিনিয়োগকারীর সেই অধিকার থাকবে। ঠিক যেমনটা হয়ে থাকে বার্সেলোনা বা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মতো ক্লাবগুলিতে। এই পথে ভারতীয় ফুটবল পেশাদারিত্বের নতুন শিখর ছোঁবে বলে মনে করছেন অনেকে।