কে বলেছে আমাদের সরকার ফেলার মতো সংখ্যা নেই, প্রশ্ন সনিয়ার
ইউপিএ-র চেয়ার পার্সন সনিয়া গান্ধীর চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী জবাব, "কে বলেছে আমাদের পক্ষে সংখ্যা নেই"? সনিয়ার এই মন্তব্য নিয়ে ইতিমধ্যে তুমুল হিসাব-নিকাশ শুরু হয়ে গিয়েছে দেশের রাজনৈতিক মহলে।

নিজস্ব প্রতিবেদন: লোকসভায় বিজেপির দখলেই রয়েছে ২৭২ (অধ্যক্ষ-সহ) আসন। এরপর এনডিএ-র মোট আসন সংখ্যা ধরলে সংখ্যাটা আরও বেশি। অর্থাত্, এই মুহূর্তে গেরুয়া সরকারে ভাঙন ধরানো কার্যত অসম্ভব। তাহলে, বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাব কি শুধুই 'রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টির কৌশল'? এমন প্রশ্নের মুখে একটি বেসরকারি চ্যানেলে ইউপিএ-র চেয়ার পার্সন সনিয়া গান্ধীর চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী জবাব, "কে বলেছে আমাদের পক্ষে সংখ্যা নেই"? সনিয়ার এই মন্তব্য নিয়ে ইতিমধ্যে তুমুল হিসাব-নিকাশ শুরু হয়ে গিয়েছে দেশের রাজনৈতিক মহলে।
২০০৩ থেকে ২০১৮। ১৫ বছরে এই নিয়ে আরেকবার অনাস্থা প্রস্তাব গৃহীত হল লোকসভায়। প্রতিরক্ষা দুর্নীতিতে অভিযুক্ত জর্জ ফার্নান্ডেজকে ক্যাবিনেটে ফিরিয়ে নেওয়ায় ২০০৩ সালে অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন তত্কালীন বিরোধী দলনেত্রী সনিয়া গান্ধী। আর এবার অন্ধ্রপ্রদেশকে বিশেষ মর্যাদা দানের ইস্যুতে টিডিপি-র দাবিকে সমর্থন করে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আনাস্থা আনল সনিয়া-পুত্রের নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস। আর সেই অনাস্থা প্রস্তাবে নিশ্চিত হারই যখন ভবিতব্য ধরে নিয়েছে রাজনীতির কুশীলবরা, ঠিক তখন চমক দিলেন সেই সনিয়াই।
প্রথমে অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে দিলেও বুধবার বাদল অধিবেশনের শুরুতেই টিডিপি-কংগ্রেসের উত্থাপিত অনাস্থা প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন লোকসভার অধ্যক্ষ সুমিত্রা মহাজন। নিয়ম অনুযায়ী, প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার ১০ দিনের মধ্যে ভোটাভুটিতে যেতে হবে। সেক্ষেত্রে ২৭ জুলাই (শুক্রবার)-এর মধ্যে ভোটাভুটি কার্যত নিশ্চিত। মনে করা হচ্ছে, শুক্রবারই হতে পারে আস্থা ভোট। ইতিমধ্যে, তৃণমূলের সব সাংসদকে শুক্রবার লোকসভায় উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছে দল। ঘাসফুলের এই বার্তা থেকেই স্পষ্ট আস্থা ভোটের জন্য কোমর বাঁধতে শুরু করে দিয়েছে বিরোধী দলগুলি। এদিকে, রবিবার বসতে চলেছে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক। জানা যাচ্ছে, সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক কমিটিতেই না কি সবরকম সম্ভবনার দিক খতিয়ে দেখা হবে কংগ্রেসের তরফে।
কেন্দ্রীয় সংসদ বিষয়কমন্ত্রী অনন্ত কুমার এদিন জানিয়েছেন, তাদের সরকার আস্থা ভোটের সম্মুখীন হতে প্রস্তুত। তাঁরা নিশ্চিত, এই ভোটে বিরোধীদের পরাজয় হবে। কিন্তু, কোন অঙ্কে সনিয়া এমন মন্ব্য করলেন? জানা যাচ্ছে, আস্থা ভোটে এনডিএ শরিক বিজু জনতা দলকে পাশে পেতে পারে বিরোধী ঐক্য। নবীন পট্টনায়কের দল দীর্ঘদিন ধরেই বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছে। এছাড়া, আরও বেশ কিছু রাজনৈতিক দলও আস্থা ভোটে বিরোধী শিবিরের পাশে দাঁড়াতে পারে। আরও পড়ুন- কোণঠাসা মোদী সরকার, লোকসভায় গৃহীত অনাস্থা প্রস্তাব
এমনিতে সংসদ চলে পাটীগণিতে। তবে, পাটীগণিতের নিয়মে সবসময় রাজনীতির সব হিসাব-নিকাশ মেলে না। ফলে, সনিয়া গান্ধীর মতো এমন শীর্ষ নেত্রীর এই মন্তব্যকে নেহাত অপ্রাসঙ্গিক মনে করা ঠিক হবে না বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।