হাতে ধরানো হল ৩৫ হাজার টাকা, লকডাউনের বাজারে চাকরি গেল ১০ হাজার শিক্ষকের
কাজ হারানোর আশঙ্কায় থাকা শিক্ষকদের পাশে দাঁড়িয়ে ঢালাও প্রতিশ্রুতি দেয় তৎকালীন বিরোধী শিবির বিজেপি৷

নিজস্ব প্রতিবেদন— করোনার জেরে গোটা দেশ লকডাউন। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। লকডাউন ঘোষনার পর থেকে উপার্জন নেই দেশের খেটে খাওয়া দিনমজুরদের। এই টানাপোড়নের মধ্যেই এবার চাকরি যাচ্ছে ত্রিপুরার কয়েক হাজার শিক্ষক—শিক্ষিকার৷ মাথায় হাত বাম আমলে চাকরি পাওয়া ১০ হাজার শিক্ষকের। কী করে চলবে দিন, বুঝতে পারছেন না তাঁরা।
২০১৪ সালে ত্রিপুরার তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের আমলে নিযুক্ত হন এই ১০ হাজার শিক্ষক৷ নিয়োগে বেনিয়মের অভিযোগ তুলে ত্রিপুরা হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হয়েছিল মামলা৷ যার জেরে এবার চাকরি হারানোর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ওই শিক্ষকদের।
ওই শিক্ষকদের চাকরিতে বহাল রাখতে বাম সরকার ১৩ হাজার শিক্ষাকর্মীর পদ তৈরি করে তাদের নিযুক্ত করেছিল৷ কাজ হারানোর আশঙ্কায় থাকা শিক্ষকদের পাশে দাঁড়িয়ে ঢালাও প্রতিশ্রুতি দেয় তৎকালীন বিরোধী শিবির বিজেপি৷ কিন্তু সরকার বদলের পর এই লকডাউনের সংকটে তাঁদের চাকরিতে না রাখার কথা টুইট করে ঘোষনা করে দিলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। যার জেরে প্রশ্ন উঠছে তা হলে কি প্রতিশ্রুতি ছিল স্রেফ ভোট নেওয়ার কৌশল! অ্যাডহক ভিত্তিতে এতদিন চাকরিতে বহাল ছিলেন এই শিক্ষকরা৷ কিন্তু দেশব্যাপী এই চরম সংকটের মাঝেই এককালীন ৩৫,০০০ টাকা দিয়ে তাঁদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হল।
আরও পড়ুন— লকডাউনের জের! গরু খাচ্ছে স্ট্রবেরি, ব্রকোলি, আঙুর! মাথায় হাত চাষীদের
শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল অবশ্য বলছেন, এদের চাকরীতে বহাল রাখার জন্য কোর্টের কাছে আবেদন করেছিল রাজ্য সরকার। এর থেকে বেশী তাঁদের আর করণীয় কিছু ছিল না। তবুও এই বরখাস্ত হওয়া শিক্ষকদের যাতে গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি পদে নিয়োগ করা যায়, সেই ব্যাপারে তাদের সরকার বদ্ধপরিকর। কিন্তু এই উক্তি আদৌ সত্যি নাকি এর পিছনেও রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার আবার কোনও কৌশল রয়েছে? সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে চাকরি হারানো শিক্ষকদের মনে।