জাতীয় স্বার্থ মাথায় রেখে Russia-কে না চটিয়েই কূটনৈতিক পথে Ukraine যুদ্ধের নিষ্পত্তি চায় ভারত
রাশিয়ার 'আগ্রাসন'কে 'কড়া ভাষায় নিন্দা' করে, কিন্তু জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত থাকে।

নিজস্ব প্রতিবেদন : রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে (Russia Ukraine War) শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তির পক্ষেই সওয়াল করেছে ভারত (India)। যুদ্ধরত দেশ থেকে ভারতীয়দের সরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ উদ্যোগী হয়েছে মোদী সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে স্পষ্ট এই অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে যে, সমস্ত সমস্যার একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সমাধানের জন্য "কূটনীতি এবং সংলাপের" পথেই বিশ্বাস করে ভারত। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যখন রাশিয়াকে চাপে রাখতে এবং আরও বিচ্ছিন্ন করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করে চলেছে, তখন ভারত রাশিয়া-ইউক্রেন সঙ্কটে সতর্কতার সাথে কাজ করছে। মূলত মস্কোর সাথে তার বহু পুরনো সম্পর্কের কারণেই সাবধানী পদক্ষেপ।
ভারত দুই দেশের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের জরুরি সমাধানের জন্য রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে আলোচনাকে ভীষণভাবেই স্বাগত জানিয়েছে। তবে ভারত স্পষ্টতই রুশ আক্রমণের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাবে ভোটদান করা থেকে বিরত রয়েছে। কারণ মস্কোর সাথে নয়াদিল্লির সম্পর্ক সময়-পরীক্ষিত। যদিও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) নেতৃত্বাধীন সরকার রাশিয়ার বিরুদ্ধে তার অবস্থান কঠোর করার জন্য আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যেও রয়েছে।
চিন এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর সাথে ভারতও রাশিয়ার (Russia) বিরুদ্ধে রাষ্ট্রসংঘের (United Nations) প্রস্তাবে ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল। কাউন্সিলের ১১ সদস্য প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ভারত ইউক্রেন সংক্রান্ত নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে বিরত থাকল। ভারত শুক্রবার ইউক্রেনের (Ukraine) বিরুদ্ধে রাশিয়ার 'আগ্রাসন'কে 'কড়া ভাষায় নিন্দা' করে, কিন্তু জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত থাকে। আলবেনিয়া, ব্রাজিল, ফ্রান্স, গ্যাবন, ঘানা, আয়ারল্যান্ড, কেনিয়া, মেক্সিকো, নরওয়ে, ব্রিটেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পক্ষে ভোট দেয়। তবে ভারত আবার যুদ্ধের ফলে তৈরি হওয়া সঙ্কটের অবসান ঘটাতে ইউক্রেনকে সব ধরনের সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। পাশাপাশি, বেলারুসে মস্কো এবং কিয়েভের মধ্যে আলোচনার জন্য চাপও দেয়।
ইউক্রেনের বিষয়ে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ১১তম জরুরি বিশেষ অধিবেশনে ভারতের অবস্থান উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টিএস তিরুমূর্তি। তিনি বলেছেন, "বিরোধের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তি ভারতের ধারাবাহিক অবস্থান। আমার সরকার দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে কূটনীতির পথে ফিরে আসা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। ভারত ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয় নাগরিকদের অবিলম্বে সরিয়ে নেওয়ার জন্য যা যা করা যায়, তা করছে। এই গুরুত্বপূর্ণ মানবিক প্রয়োজনীয়তাটি অবিলম্বে সমাধান করা উচিত।" পাশপাশি, ভারতীয় নাগরিকদের উদ্ধারের জন্য তাদের সীমান্ত খুলে দেওয়ায় ইউক্রেনের সমস্ত প্রতিবেশী দেশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিরুমূর্তি ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে নয়াদিল্লি, তার জাতীয় স্বার্থের কথা মাথায় রেখেই এই অবস্থান নিয়েছে। কারণ রাশিয়া ভারতের সবচেয়ে বড় অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহকারী দেশ। সম্প্রতি ভারতকে একটি ব্যালিস্টিক মিসাইল সাবমেরিনও সরবরাহ করেছে পুতিনের দেশ।
আরও পড়ুন, Russia-Ukraine Conflict: 'ঐতিহাসিক মুহূর্ত', অবিলম্বে EU-এর সদস্যপদ চান জেলেনস্কি