শিকলে বাঁধা মানসিক ভারসাম্যহীন ক্যানসার আক্রান্ত মেয়ে, NRS-এ হন্যে হয়ে ডাক্তারের খোঁজ বাবার
শেষে টিকিট কেটে শিকল-তালা বাঁধা অবস্থায় মেয়েকে নিয়ে যখন বাবা আউটডোরে হাজির হলেন, তখন আউটডোরে তালা পড়ে গিয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন : ব্লাড ক্যান্সার আক্রান্ত মেয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন। হাসপাতালেই তাঁকে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছেন বাবা। আর নিজে ডাক্তারের ছুটে বেড়াচ্ছেন এ বিভাগ থেকে ও বিভাগ। এনআরএস মেডিক্যাল কলেজে আজ চোখে পড়ল এমনই অসহায় দৃশ্য। কিন্তু সকাল থেকে টানা দৌড়েও শেষমেশ মেয়েকে ডাক্তার দেখানো আর হল না অসহায় বাবার। পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল থেকে কলকাতায় অন্যতম সেরা সরকারি হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে এসে চূড়ান্ত দুর্ভোগের শিকার হতে হল দিনমজুর পরিবারকে।
বছর পঁচিশের তরুণী আনসুরা বিবি। বছরখানেক আগে ব্লাড ক্যানসার ধরা পড়ে আনসুরা বিবির। ৫ বছরের সন্তান সহ আনসুরা বিবিকে বাপের বাড়িতে ফিরিয়ে দিয়ে যায় শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। এরপরই এনআরএস-এর হেমাটোলজি বিভাগে মাসখানেক আগে তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়। প্রায় ১৬টি কেমো দেওয়া হয় আনসুরা বিবিকে। এরপরই মানসিক সমস্যা দিতে শুরু করে আনসুরা বিবির। তড়িঘড়ি তাঁকে নিয়ে এনআরএস-এ ছুটে আসেন পরিবারের লোকেরা।
কিন্তু অভিযোগ, হাসপাতালে এসে চূড়ান্ত হয়রানির শিকার হতে হয় তাঁদের। হেমাটোলজি বিভাগের আউটডোরে টিকিট করে রোগীকে নিয়ে যান তাঁরা। হেমাটোলজি বিভাগ থেকে বলে দেওয়া হয় এই রোগীর মানসিক চিকিৎসা দরকার। তাঁরা যেন সাইক্রিয়াট্রি বিভাগে টিকিট কেটে দেখাতে যান। দুর্ভোগের সেই শুরু। কয়েকশো মানুষের ভিড়ে লাইনে দাঁড়িয়ে ফের করে নতুন টিকিট কেটে দেখাতে হবে রোগীকে।
আরও পড়ুন, দাম ধরাছোঁয়ার বাইরে, কলকাতার হোটেল ছয়লাপ 'পেঁয়াজ ছাড়া মাংস'-এর পোস্টারে
মেয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন। তাঁকে শিকল-তালা দিয়ে বেঁধে রেখেই এক বিভাগ থেকে আরেক বিভাগে ছুটে বেড়ান অসহায় দিনমজুর বাবা। এই করতে করতে ঘড়ির কাঁটা ২-এর ঘর টপকে যায়। শেষে টিকিট কেটে শিকল-তালা বাঁধা অবস্থায় মেয়েকে নিয়ে যখন বাবা আউটডোরে হাজির হলেন, তখন আউটডোরে তালা পড়ে গিয়েছে। ১০৫ কিলোমিটার দূর থেকে কলকাতার অন্যতম সেরা সরকারি হাসপাতালে ছুটে এসে এই দুর্ভোগে হতাশ দিনমজুর পরিবার।